মায়াজম





Miasm আক্রান্ত রোগীই চিররোগ। তাই এ সংশ্লিষ্ট রোগী চিকিৎসায় মায়াজম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকা অবশ্যই দরকার/প্রয়োজন।

উল্লেখ্য যে, কেবল মাত্র, প্রাকৃতিক ও সদৃশ বিধান “হোমিওপ্যাথি” চিকিৎসায়- ই Miasm ধ্বংস করতে পারে। অনেকের ধারণা সোরা একটা মায়াজম, যার দ্বারা চিররোগের আটভাগের সাতভাগ সংঘটিত হয়। কিন্তু এখানেই আমাদের মারাত্নক ভুল। সোরা মায়াজম নয়, একটা মায়াজমেটিক অবস্থা যা সোরিক মায়াজমের দ্বারা সৃষ্টি হয়। সিফিলিস ও সাইকোসিস মায়াজম নয় মায়াজমেটিক অবস্থা, যা সিফিলিটিক ও সাইকোটিক মায়াজম দ্বারা সৃষ্ট হয়। একটা রোগাবস্থা এবং তার কারণ এক নয়।টিউবারকুলোসিস টিউবারকুলার কখনই এক হতে পারে না। দ্বিতীয়টি হলো কারণ এবং প্রথমটি হলো রোগ।

মায়াজম কি?
মায়াজম হল হোমিওপ্যাথির গোড়ার কথা এবং এই গোড়ার কথাটি গোড়া থেকে বুঝে না নিলে এবং তদ্রুপ ব্যবস্থাপত্র অজানা থাকলে চিকিৎসকের সকল শ্রম যে পন্ডশ্রমে পরিণত হবে তাতে সন্দেহ নেই।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিধান মতে, মায়াজম হল রোগের মূল কারণ এবং জীবাণু গুলো হল উত্তেজক কারণ।যে সকল প্রাকৃতিক অদৃশ্য কারণসমূহ হইতে রোগ উৎপত্তি হয়, সে সকল কারণ সমূহকে মায়াজম বলে।

মহাত্মা হ্যানিম্যান বলেন, “যাবতীয় রোগ মায়াজমের অশুভ প্রভাবে সৃষ্টি হয়।” মায়াজম শব্দের অর্থ উপবিষ, কলুষ, পুতিবাষ্প, ম্যালেরিয়ার বিষ প্রভৃতি। যাবতীয় রোগের কারণই হল এই মায়াজম। তরুণ পীড়া তরুণ মায়াজমের অশুভ প্রভাবে এবং চিররোগ চির মায়াজমের অশুভ প্রভাবে সৃষ্টি হয়। ইহা প্রাকৃতিক রোগ সৃষ্টিকারী দানব।

হ্যানিম্যান বলেছেন, চিররোগ সৃষ্টির মূল কারণ হইল তিনটি চিররোগবীজ। ইহাদের মধ্যে সোরা হইল আদি রোগ বীজ। সকল রোগের মূল কারণ হইল সোরা।

হ্যানিম্যান বলেছেন, বংশ পরস্পরের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানব দেহের মধ্যে এই সোরা মায়াজম কল্পনাতীতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন অসংখ্য প্রকারের বিকৃতি, ক্ষত, বিশৃঙ্খলা ও যন্ত্রণার প্রতিমূর্তি রুপে অন্ত পীড়ায় সৃষ্টি করে থাকে। অপরদিকে দূষিত সঙ্গমের মাধ্যমে সাইকোসিস ও সিফিলিস মায়াজম অর্জিত হয়। এই দিক দিয়া চিন্তা করিলে মায়াজমকে আমরা অর্জিত এবং বংশানুক্রমিক উভয়ই বলতে পারি।

সুতরাং মায়াজম হচ্ছে এক ধরনের গতিময় দূষণ মাধ্যম যাহা জীব দেহের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গে একবার প্রবিষ্ট হলে জীবনীশক্তির উপর প্রভুত্ব করে, ব্যক্তিকে সার্বিকভাবে এমনিধারায় দূষিত করে যার পিছনে একটি স্থায়ী রোগজ অবস্থা স্থাপন করে যাহা সম্পূর্ণ রুপে মায়াজম বিরোধী প্রতিকারক দ্বারা দূরীভূত না হলে রোগীর সারাজীবন ব্যাপী বিরাজ করবে এবং বংশপরস্পরায় প্রবাহমান থাকে।

কোন রোগ স্থুল ঔষধ প্রয়োগে বা অসম বিধানে চিকিৎসা করায় তার দ্বারা চাপা পড়ে শক্তিশালী রোগ বীজ নামে দেহাভ্যন্তরে অবস্থান করে। এটাই রোগ জীবানু বা উপবিশ (Miasm)। এই উপবিষই (Miasm) যা বংশ পরস্পরায় মানব দেহে চিরস্থায়ী রুপ লাভ করে।

মায়াজম হচ্ছে এমন কিছু যা একবার মানব দেহে ঢুকলে এবং সুচিকিৎসিত না হলে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি করে, যা সারা জীবন ধরে চলতে থাকে এবং সন্তান সন্ততির মধ্যেও তার ফলজনিত অস্বাভাবিক অবস্থার চিহ্ন প্রায়শই সুপ্ত অবস্থায় বর্তমান থাকে।

When a person becomes ill, it is the whole that is sick: body, mind, spirit. The body manifests symptoms of illness but it is not the origin of the illness. Upon death, the physical body remains, but it is no longer curable. That which is curable, the ‘vital force’, has left the body. The origin of illness lies in an imbalance of the vital force. The symptoms expressed by the body, mind, and spirit are the manifestation of that imbalance. By matching the symptoms of illness with the appropriate homeopathic remedy, the vital force returns to balance. The symptoms disappear as the person heals themselves.

কোনও ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লে এটি পুরোপুরি অসুস্থ: দেহ, মন, আত্মা। শরীর অসুস্থতার লক্ষণগুলি প্রকাশ করে তবে এটি অসুস্থতার উৎস নয়। মৃত্যুর পরে, দৈহিক দেহটি থেকে যায় তবে এটি আর নিরাময়যোগ্য নয়। যা নিরাময়যোগ্য, ‘প্রাণশক্তি’ শরীর ছেড়ে চলে গেছে। অসুস্থতার উৎস প্রাণশক্তিটির ভারসাম্যহীনতার মধ্যে। শরীর, মন এবং আত্মার দ্বারা প্রকাশিত লক্ষণগুলি হল ভারসাম্যহীনতার প্রকাশ। যথাযথ হোমিওপ্যাথিক প্রতিকারের সাথে অসুস্থতার লক্ষণগুলি মেলে, অত্যাবশ্যক শক্তি ভারসাম্য ফিরিয়ে দেয়। ব্যক্তি নিজেকে নিরাময় করার সাথে সাথে লক্ষণগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়।

Homeopathy has 4 principles that are its foundation. They remain unchanged over the last 200 years as their truth is demonstrated through successful treatment of the sick.

হোমিওপ্যাথির ৪ টি মূলনীতি রয়েছে যা এর ভিত্তি। অসুস্থদের সফল চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তারা গত ২০০ বছর ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে।

The cornerstone principle is Similia Similbus Curentur, “Let likes cure likes” Homeopathy actually derives its name from the Greek, homoeo=’similar’, and pathos=’suffering’. Through research and practice Hahnemann verified cure through the use of similars. A substance that can produce disease in a healthy person is used to elicit a healing response in someone presenting with a similar disease. Each person shows symptoms of the body/mind/spirit when they are sick. Some of these symptoms are common to that sickness, others are characteristic of that person in their sickness. The homeopathic practitioner matches the symptom picture of the homeopathic remedy to the symptom picture of the person, with particular attention paid to those symptoms which are unique to the individual.

ভিত্তি নীতিটি হ’ল সিমিলিয়া সিমিলবাস কুরেন্টুর, “চিকিৎসার নিরাময়ের পছন্দ হোক” হোমিওপ্যাথি আসলে গ্রীক, হোমিও = ‘অনুরূপ’ এবং প্যাথোস = ‘যন্ত্রণা’ থেকে এর নাম নিয়েছে। সিমালার ব্যবহারের মাধ্যমে গবেষণা এবং অনুশীলনের মাধ্যমে হ্যানিম্যান যাচাই করা নিরাময়। সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে রোগ তৈরি করতে পারে এমন একটি পদার্থ একইরকম রোগের সাথে উপস্থিত কাউকে নিরাময় প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি ব্যক্তি যখন তারা অসুস্থ থাকে তখন শরীর / মন / আত্মার লক্ষণগুলি দেখায়। এর মধ্যে কয়েকটি লক্ষণ সেই অসুস্থতার পক্ষে সাধারণ, অন্যরা তাদের অসুস্থতায় সেই ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ব্যক্তির লক্ষণ চিত্রের জন্য হোমিওপ্যাথিক প্রতিকারের লক্ষণ চিত্রটির সাথে মেলে, সেই লক্ষণগুলিতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া যা ব্যক্তির পক্ষে অনন্য।

The second principle of homeopathy is The Single Remedy. Only one homeopathic remedy is given at any one time. It would be difficult, if not impossible, to ascertain the action of multiple homeopathic remedies given all at once. The response of the vital force would be unpredictable and ambiguous. Though Hahnemann experimented with this approach he abandoned it as unsatisfactory.

হোমিওপ্যাথির দ্বিতীয় নীতিটি হল সিঙ্গেল প্রতিকার। যে কোনও এক সময় মাত্র একটি হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার দেওয়া হয়। একসাথে দেওয়া একাধিক হোমিওপ্যাথিক প্রতিকারের ক্রিয়া নির্ধারণ করা কঠিন, যদি অসম্ভব না হয় তবে তা কঠিন হবে। অত্যাবশ্যক শক্তির প্রতিক্রিয়া হবে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অস্পষ্ট। যদিও হ্যানিম্যান এই পদ্ধতির সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন তবে তিনি এটিকে অসন্তুষ্টি হিসাবে ত্যাগ করেছিলেন।

The third principle of homeopathy is The Minimum Dose. This refers to the infinitesimal doses of medicine given as well as to the repetition of dose only when necessary. Drugs given to individuals in material doses frequently cause side effects or adverse reactions. To curtail this problem, the homeopath administers the smallest possible dose so as to maximize beneficial effects and minimize side effects. Repetition of dose is determined by the individual’s response to the remedy. Unnecessary repetition may lessen the response, even to the correct remedy. In homeopathy, less is better.

হোমিওপ্যাথির তৃতীয় নীতিটি হ’ল ন্যূনতম ডোজ। এটি কেবলমাত্র যখন প্রয়োজন হয় তখন ওষুধের অসীম ওষুধের সাথে সাথে ডোজটির পুনরাবৃত্তিকে বোঝায়। উপাদানগুলির ডোজগুলিতে ব্যক্তিদের দেওয়া ড্রাগগুলি ঘন ঘন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণ হয়ে থাকে। এই সমস্যাটি কমাতে, হোমিওপ্যাথ সম্ভাব্যতম ক্ষুদ্রতম ডোজ পরিচালনা করে যাতে উপকারী প্রভাবগুলি সর্বাধিকতর করতে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি হ্রাস করতে পারে। ডোজ পুনরাবৃত্তি প্রতিকার ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া দ্বারা নির্ধারিত হয়। অপ্রয়োজনীয় পুনরাবৃত্তি প্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে পারে এমনকি সঠিক প্রতিকারের জন্যও। হোমিওপ্যাথিতে কম ভাল হয়।

The fourth principle of homeopathy is The Potentized Remedy. Homeopathic remedies, though made from natural substances such as plants, minerals, animals, etc., are manufactured unlike any other medicine. Through a process of serial dilution a very dilute extract is made. With every step of dilution the remedy is vigorously shaken-succussed. This process of succussion is designed to arouse the dynamic nature of the medicine. To affect the vital force, a similarly energetic, homeopathic remedy must be employed.

হোমিওপ্যাথির চতুর্থ নীতিটি হ’ল পোটেন্টাইজড প্রতিকার। হোমিওপ্যাথিক প্রতিকারগুলি যেমন উদ্ভিদ, খনিজ, প্রাণী ইত্যাদির মতো প্রাকৃতিক পদার্থ থেকে তৈরি তবে অন্য কোনও ওষুধের থেকে ভিন্ন। সিরিয়াল হ্রাস একটি প্রক্রিয়া মাধ্যমে একটি খুব পাতলা এক্সট্রাক্ট তৈরি করা হয়। দুর্বলতার প্রতিটি পদক্ষেপের সাথে প্রতিকারটি জোরালোভাবে কাঁপানো-আক্রান্ত হয়। সাফল্যের এই প্রক্রিয়াটি ওষুধের গতিশীল প্রকৃতি জাগ্রত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। অত্যাবশ্যক শক্তিকে প্রভাবিত করার জন্য, একইভাবে শক্তিশালী, হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার অবশ্যই কাজে লাগানো উচিত।

শর্তাবলীশর্তাবলী
১। Dynamis – life energy, vital force. ১। ডায়নামিস – জীবন শক্তি, প্রাণশক্তি।
২। Potentized – usually refers to a substance prepared according to homeopathic pharmaceutical standards. This means that it has gone through serial dilution and succussion. ২। সম্ভাব্য – সাধারণত হোমিওপ্যাথিক ফার্মাসিউটিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রস্তুত পদার্থকে বোঝায়। এর অর্থ এটি সিরিয়াল হ্রাস এবং সংঘাতের মধ্য দিয়ে গেছে।
৩। Remedy – medicine, as in homeopathic remedy. ৩। প্রতিকার – ওষুধ যেমন হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার হিসাবে।
৪। Succussion – the process of forcefully striking a homeopathic remedy against a firm surface. ৪। সাকাশন – একটি দৃঢ় পৃষ্ঠের বিরুদ্ধে একটি হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার জোরপূর্বক আঘাত করার প্রক্রিয়া।
৫। Vital force – the energy that maintains life in the individual (see Organon aphorisms 9-12). ৫। অত্যাবশ্যক শক্তি – এমন শক্তি যা ব্যক্তির জীবন বজায় রাখে (দেখুন অর্গানন অ্যাফোরিজমস 9-12)।

Who we are and what we do.



SL Description of homeopathic ethics
১। পটভূমি।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নীতিমালা হোমিওপ্যাথদের জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা প্রণয়ন ও প্রচলনের একটা পটভূমিকা আছে। ১৯৮৩ সালের ২৫ শে আগস্ট “ দি বাংলাদেশ গেজেট ” –এ THE BANGLADESH HOMOEOPATHIC PRACTITIONERS ORDINANCE, 1983 ( Ordinance no, XLI of 1983 ) প্রকাশিত হয়।

এ গেজেটের ৫৩১৫ পৃষ্ঠায় এ অর্ডিন্যান্সের ৩৪ সেকশনে বলা হয়েছেঃ “ Code of Ethics – A registered practitioner and listed Homoeopath shall abide by the Code of Ethics for Homoeopathic practitioners framed by the board and approved by the Government . ” অর্থাৎ বোর্ড কর্তৃক প্রণীত ও সরকার কর্তৃক অনুমোদিত চিকিৎসা নীতিমালা ( Code of Ethics ) সকল রেজিস্টার্ড ও তালিকাভুক্ত হোমিওপ্যাথগণকে মেনে চলতে হবে। এখানে বোর্ড বলতে “ বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড ” ( সাবেক “ বোর্ড অভ হোমিওপ্যাথিক সিস্টেম অভ মেডিসিন ” ) – কে বুঝানো হয়েছে।

ইতোমধ্যে বোর্ড কর্তৃক উক্ত চিকিৎসা নীতিমালা প্রণীত ও প্রকাশিত হয়েছে । বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত “ বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পত্রিকা ” – এর সেপ্টেম্বর, ১৯৮৫, ২য় বর্ষ, ৩য় সংখ্যায় বোর্ডের রেজিস্টার মোঃ ফজলুর রহমান ভূঁয়া এ বিষয়ে নিম্নোক্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন –

“ এই মর্মে সকল রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাইতেছে যে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩- এর ৩৪ নং ধারা অনুযায়ী বোর্ড কর্তৃপক্ষ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের কর্তব্য ও দায়িত্ব বিষয়ক নিয়মাবলী সম্বলিত ‘ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নীতিমালা ’ নামক একটি পুস্তিকা রচনা করিয়াছেন। উক্ত পুস্তিকায় উল্লেখিত নীতিমালার শর্তাদি লঙ্ঘনকারীর জন্য এক হাজার টাকা জরিমানা ও এক বৎসরের কারাদণ্ডসহ রেজিস্ট্রেশন বাতিলের বিধান রহিয়াছে। ”

“ এমতাবস্থায় উক্ত পুস্তিকার প্রতি কপির জন্য ছয় টাকা ব্যাংক ড্রাফ্‌ট বোর্ডে প্রেরণ করিয়া কপি সংগ্রহ করতঃ হোমিও বিধানসমূহ পালন করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাইতেছে। ”

উক্ত পুস্তিকার ১ পৃষ্ঠার শেষে লেখা তথ্য থেকে দেখা যায় যে, ১৯৮৪ ইং সালের ২০ শে ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত বোর্ডের ষষ্ঠ সভায় বোর্ড কর্তৃক প্রণীত এ পুস্তিকাটা অনুমোদিত হয়। তাছাড়া এ পুস্তিকার প্রচ্ছদে উল্লেখ রয়েছে যে, এটার প্রকাশ কাল ১৯৮৫ ইং সাল।

“ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের কর্তব্য বিষয়ক নিয়মাবলী ১৯৮৩ ইং সনের ২৫শে আগস্ট প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটের অর্ডিন্যান্স ( No XLI, 1983 ), সেকশন ৩৪, পৃষ্ঠা ৫৩১৫ এর সার-সংক্ষেপ অনুযায়ী রচিত । ”
২। সকল প্রকার পীড়িতের প্রতি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কর্তব্য।
১। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সব সময় নিশ্চিতভাবে তাঁর কার্যকলাপের সর্বোচ্চ মান রক্ষা করবেন।
২। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক কখনও নিজে শুধুমাত্র আয়ের উদ্দেশ্য দ্বারা প্রভাবিত হতে পারবেন না
৩। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের অবশ্যই উদ্দেশ্য থাকবে রোগীকে সামগ্রিকভাবে চিকিৎসা করার এবং তাঁর চিকিৎসার ধারা নিশ্চয়ই ডাক্তার স্যামুয়েল হানেমান রচিত ‘ অর্গানন অব মেডিসিন ’ নামক গ্রন্থের উপর প্রতিষ্ঠিত হবে।
৪। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সর্বদা রোগীর স্বাস্থ্যকে পুনরুদ্ধার করা ও মানুষের জীবন রক্ষা করার গুরুত্বকে নিশ্চিতভাবে মনে রেখে চিকিৎসা কর্মে ব্রতী হবেন।
৫। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের নিকট তাঁর রোগী পূর্ণ আনুগত্যের এবং তাঁর পেশাগত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার দাবী রাখে। যখনই কোন চিকিৎসা বা পরীক্ষা তাঁর সাধ্যের বাইরে হবে তখন তিনি অপর এমন একজন চিকিৎসককে আহ্বান করবেন যার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা আছে, অথবা তিনি সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ বা চিকিৎসা গ্রহণের জন্য রোগীকে উপদেশ দেবেন।
৬। চিকিৎসক হিসাবে তাঁর উপর যে বিশ্বাস ন্যাস্ত করা হয়েছে সে পরিপ্রেক্ষিতে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রোগীর রোগ সম্বন্ধীয় যাবতীয় গোপন তথ্য যা তাঁকে বলা হয়েছে বা তিনি নিজে জানতে পেরেছেন সে সবের কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করতে রোগীর নিকট দায়বদ্ধ থাকবেন।
৭। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক জরুরি ক্ষেত্রে কোন রোগীকে নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করবেন, যদি না তিনি আশ্বস্ত হন যে তা অন্য কারও দ্বারা সম্ভব এবং তিনি তা নিশ্চয়ই দেবেন।
৮। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক নিশ্চয়ই এমন শক্তিকৃত ঔষধ ক্ষুদ্রতম মাত্রায় প্রয়োগ করবেন যা সূক্ষ্ম মানবদেহে পরীক্ষিত হয়েছে অথবা এই পেশার সাথে জড়িত উপযুক্ত বা যোগ্য ব্যক্তির দ্বারা চিকিৎসা শাস্ত্রানুসারে অনুমোদিত।
৯। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ১৯৮৩ ইং সালের বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিসনার্স অর্ডিন্যান্স নং ৪১ নিশ্চয়ই অনুসরণ করবেন এবং ভবিষ্যতে সরকার কর্তৃক গৃহিত হোমিওপ্যাথিক মূলনীতি ভিত্তিক ব্যবস্থাদি অবশ্যই পালন করবেন।
৩। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের পদবী বা উপাধি ব্যবহার ও প্রচার নীতি।
১। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসা কর্মস্থলে বা চেম্বারের দরজায় বা দেয়ালে একটি নামফলক ব্যবহার করতে পারবেন। সে নামফলকে তিনি তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা অথবা ডিগ্রী বা ডিপ্লোমা যা তাঁকে এমন কোন কর্তৃপক্ষ প্রদান করেছে, যাকে ঐ সকল ডিগ্রী, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য সরকার উপযুক্ত বলে স্বীকার করেছেন বা ক্ষমতা দিয়েছেন, তা উল্লেখ করতে পারবেন।
২। কোন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তাঁর নামফলক, প্যাড বা রোগীলিপিতে নিজেকে কোন বিশেষজ্ঞ বলে বা কোন রকম চিকিৎসায় পারদর্শী বলে প্রকাশ করতে পারবেন না।
৪। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের জন্য নীতি বহির্ভূত কার্যকলাপ।
১। নিজের গুণ বা পারদর্শিতা সম্পর্কে কোন প্রকার প্রচার বা বিজ্ঞপ্তি করা।
২। রোগীর সাথে কোন প্রকার চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া অথবা গ্যারান্টি দিয়ে কোন প্রকার চিকিৎসা করা।
৩। হোমিওপ্যাথিক মূলনীতি বিরধিজে কোন প্রকার টনিক, মলম, প্যাটেন্ট বা অন্য কোন প্রকার ঔষধ প্রস্তুত বা ব্যবহার করা।
৪। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের নিজ পেশার স্বাধীনতা থাকে না এমন কোন চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে বা প্রোগ্রামের সাথে জড়িত থাকা।
৫। রোগীকে চিকিৎসা করার জন্য উপযুক্ত পেশাগত ফি ব্যতীত অন্য কোন প্রকার পুরুস্কার বা অর্থ গ্রহণ।
৬। রোগীর মানসিক এবং শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে বা নষ্ট করে এমন কোন ঔষধ প্রয়োগ করা বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যদি তা চিকিৎসা বিজ্ঞানের কঠোর বিবেচনায় চিকিৎসাগত বা রোগ প্রতিরোধগত নির্দেশ অনুযায়ী রোগীর স্বার্থে তাঁর উপর প্রয়োগ করা না হয়ে থাকে।
৭। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষেত্রে যেসকল আবিস্কার স্বীকৃত হয়নি এবং সুস্থ মানবদেহে পরীক্ষিত হয়নি সে সকল গবেষণালব্ধ ফল প্রকাশ করা।
৮। আইন সঙ্গত ভাবে প্রমান করতে পারা যাবে না, চিকিৎসা ক্ষেত্রে এমন কোন কাজ করা। ”
৫। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের একের প্রতি অপরের কর্তব্য।
১। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তাঁর সতীর্থ এবং সহকর্মীদের সাথে এমন সব আচরণ করবেন যা তিনি তাদের নিকট হতে আশা করেন।
২। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কোন অবস্থাতেই অপর একজন হোমিওপ্যাথিক বা অন্য কোন মতাবলম্বী চিকিৎসকের সম্পর্কে দুর্নাম বা কুৎসা রটনা করতে বা কটূক্তি করতে পারবেন না।
৩। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এই পেশায় রত এবং সকল মতাবলম্বী চিকিৎসকদেরকে সম্মান প্রদর্শন করবেন।
৪। কোন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক অন্য কোন চিকিৎসকের নিকট হতে কোন অবস্থাতেই প্রলুব্ধ করে বা অন্য কোন উপায়ে রোগী সরিয়ে আনতে পারবেন না।
৫। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে যদি জরুরি ক্ষেত্রে অন্য একজন চিকিৎসকের চিকিৎসাধীন রোগীকে দেখার জন্য আহ্বান করা হয় তিনি পূর্ণ সততার সাথে সে রোগীকে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি রোগীকে বা রোগীর আত্মীয়-সজনদের নিকট সকল অবস্থাতেই পূর্বতন ডাক্তারের কোন প্রকার ভুল চিকিৎসার খবর, তা যদি হয়েও থাকে, গোপন রাখবেন। ”
৬। কোন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হওয়ার প্রাক্কালে অবশ্যই নিম্নলিখিত শপথ বাক্য পাঠ করবেন।

বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের ঘোষণাপত্র।
১। আমি মনেপ্রাণে শপথ করছি যে আমি রোগার্ত মানুষের সেবায় আমার জীবন উৎসর্গ করব।
২। আমি আমার শিক্ষকদের প্রতি সব সময় যোগ্য সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব।
৩। আমি সততা ও মর্যাদার সাথে আমার পেশায় নিয়োজিত থাকব।
৪। আমার নিকট আমার রোগীর স্বাস্থ্যই হবে সর্বপ্রধান বিবেচ্য বিষয়।
৫। আমার উপর অর্পিত গোপনীয়তা আমি অবশ্যই রক্ষা করব।
৬। আমি আমার ক্ষমতার সর্বদিক দিয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বৃত্তির সম্মান ও মহান ঐতিহ্য রক্ষা করব।
৭। আমার সতীর্থদের সাথে আমি অবশ্যই সৌভ্রাতৃত্ব রক্ষা করব।
৮। আমার এবং আমার রোগীদের মধ্যে বাধার সৃষ্টি করতে পারে এমন কোন ধর্মীয়, জাতীয়, গোষ্ঠীয়, দলগত বা রাজনৈতিক চিন্তা বা বিবেচনাকে আমি কখনও প্রশ্রয় দেব না।
৯। গর্ভ সঞ্চারের মুহূর্ত থেকে মানব জীবনের প্রতি আমি যথাসাধ্য সম্মান প্রদর্শন করব। এমনকি ভীতি প্রদর্শনেও আমি আমার চিকিৎসাজ্ঞান মানবিকতা পরিপন্থী কোন কাজে ব্যবহার করব না ।
১০। অর্গানন অব মেডিসিন, গ্রন্থের নীতি অনুসারে পরীক্ষিত, শক্তিকৃত একটি মাত্র ঔষধ একবারে সূক্ষ্ম মাত্রায় প্রয়োগ করব।

আমি সজ্ঞানে, সরলমনে, সস্রদ্ধচিত্তে এবং বিনা প্ররোচনায় উল্লেখিত শপথনামা পাঠ করলাম।